গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়
গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিড রিফ্লাক্স একটি সাধারণ সমস্যা, যা অনেকের জীবনকে বিঘ্নিত করে। এই সমস্যায় পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদনালীতে উঠে আসে এবং বুকের মাঝখানে জ্বালা, বমি ভাব, গলায় জ্বালা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়।
গ্যাস্ট্রিক কেন হয়?
গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায় জানার আগে, এর কারণগুলো জেনে নেয়া উচিত। এতে আমরা সহজে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে বাঁচতে পারবো।
গ্যাস্ট্রিক হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে, যেমন:
অতিরিক্ত খাওয়া: একবারে অনেক খাওয়া বা অতিরিক্ত মশলাদার, চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া।
অম্লতার পরিমাণ বৃদ্ধি: পাকস্থলীর অম্লতার পরিমাণ বৃদ্ধি হলে গ্যাস্ট্রিক হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।
হাইটাস হার্নিয়া: ডায়াফ্রামে একটি ছোট ফাটলের কারণে পাকস্থলীর একটি অংশ বুকের ভিতরে ঢুকে যেতে পারে, যা গ্যাস্ট্রিকের কারণ হতে পারে।
মশলাদার খাবার: মশলাদার খাবার পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন বাড়াতে পারে।
চাপ: মানসিক চাপ গ্যাস্ট্রিককে আরও খারাপ করতে পারে।
কফি, চা, কার্বনেটেড পানীয়: এই ধরনের পানীয় পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন বাড়াতে পারে।
ধূমপান: ধূমপান পাকস্থলীর উপরের অংশের পেশীকে দুর্বল করে দেয়, যার ফলে অ্যাসিড খাদনালীতে উঠে আসতে পারে।
কিছু ওষুধ: কিছু ওষুধ, যেমন অ্যাসপিরিন, ইবুপ্রোফেন ইত্যাদি পাকস্থলীর আস্তরণকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
গ্যাস্ট্রিকের লক্ষণ
- বুকের মাঝখানে জ্বালা
- গলায় জ্বালা
- বমি ভাব
- বমি
- খাবার গিলতে সমস্যা
- বদহজম
- পেট ফোলা
গ্যাস্ট্রিক দূর করার ঘরোয়া উপায়
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন: ছোট ছোট করে বারবার খান, মশলাদার, চর্বিযুক্ত, অম্লীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
পানি পান: প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
আদা চা: আদা চা পাকস্থলীর অ্যাসিড কমাতে সাহায্য করে।
মধু: মধু পাকস্থলীর আস্তরণকে সুরক্ষিত করে।
হলুদ: হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে পারে।
পেপারমিন্ট চা: পেপারমিন্ট চা পাকস্থলীর সমস্যাগুলিকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে।
গ্যাস্ট্রিক দূর করার অন্যান্য উপায়
ওষুধ: ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টাসিড বা অন্যান্য ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
লাইফস্টাইল পরিবর্তন: ধূমপান বন্ধ করা, ওজন কমানো, স্ট্রেস ম্যানেজ করা ইত্যাদি।
সার্জারি: ক্ষেত্রবিশেষে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
মনে রাখবেন, গ্যাস্ট্রিক একটি গুরুতর সমস্যা হতে পারে। তাই, উপরোক্ত ঘরোয়া উপায়গুলো ব্যবহার করেও যদি আপনার সমস্যা না কমে, অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
বি:দ্র: এই তথ্য শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে এবং এটি কোনো ধরনের চিকিৎসা পরামর্শের বিকল্প নয়।